ইজারাদার জগলুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এত দিন ঘাটের মালিকানা ছিল জেলা পরিষদের কাছে। ইজারা বাবদ জেলা পরিষদকে দৈনিক এক লাখ টাকা দিতে হচ্ছে তাঁর। সম্প্রতি উভয় পাশে বন্দর ঘোষণা হওয়ায় ঘাটের নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএর কাছে। সে জন্য বার্ষিক ৭৫ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে তাদের কাছ থেকেও ইজারা নেন। সে হিসাবে তাঁর দৈনিক ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ইজারার খরচ এবং আরও ৮০ হাজার টাকা কর্মীদের পেছনে ব্যয় হচ্ছে। এর আগে ভাড়া ছিল ৩৮০ টাকা। তখন ক্ষতি কোনোমতে পুষিয়ে নিতেন। কিন্তু তিন মাস আগে আন্দোলনের মুখে ভাড়া কমিয়ে ২৫০ টাকা করা হয়। এ কারণে গত তিন মাসে তাঁর ৩ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন কোম্পানি যাত্রী পরিবহন করলে তাঁর লোকসান হবে।
জগলুল হোসেন বলেন, ৬ জানুয়ারি সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসের কার্যক্রম বন্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন তিনি। আদালত ওই কোম্পানির কার্যক্রম দুই মাসের জন্য স্থগিত করেন। বিষয়টি তিনি বিআইডব্লিউটিএ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সব দপ্তরে জানিয়েছেন।
সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসকে যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআইডব্লিউটিএ দুটি চিঠি দিয়েছে। যার একটি স্পিডবোট চালানোর অনুমতি ও অন্যটিতে ইজারাদারকে শুল্ক পরিশোধ করার নির্দেশনা রয়েছে। চিঠি দুটিতে দেখা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যাত্রী পরিবহনের জন্য সামরিক রুট পারমিট ও সময়সূচি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা করে এবং প্রতিবার ঘাটে স্পিডবোট ভেড়ানোর জন্য ৭৫ টাকা করে ইজারাদারকে শুল্ক পরিশোধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সন্দ্বীপের মানুষ ফিটনেসযুক্ত নিরাপদ নৌযানের দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষের নৌ-যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে তাঁরা ছয়টি স্পিডবোট কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌপথে চালানোর জন্য তৈরি করেন। ১ জানুয়ারি বিআইডব্লিউটিএ সেগুলোর লাইসেন্সও দেয়। ৪ জানুয়ারি তাঁদের লোকজন কাউন্টার স্থাপন করতে গেলে বর্তমান ইজারাদারের লোকজন বাধা দেন। বিষয়টি তাঁরা বিআইডব্লিউটিএকে জানানোর পর ইজারাদারকে দেওয়ার জন্য শুল্ক নির্ধারণ করে ৫ জানুয়ারি আরও একটি চিঠি দেন। এরপর ইজারাদার আদালতে গিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে রিট করেছেন বলে শুনেছেন। কাগজপত্র পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা তাঁরাও নেবেন বলে জানান তিনি।