ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার কট্টরপন্থীরা ঠিক সেই সুযোগেরই অপেক্ষায় আছে। হামাস এখনো নিশ্চিহ্ন হয়নি, যথেষ্ট গাজাবাসীকে হত্যা করা হয়নি—এই যুক্তিতে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ ও জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেনগভির এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে গোঁ ধরেছিলেন। চলতি শর্তে যুদ্ধবিরতি মেনে নিলে তাঁরা সরকার থেকে বেরিয়ে যাবেন, এমন হুমকিও তুলেছিলেন। মোটেই বিস্ময়ের ব্যাপার হবে না, যদি নিজের গদি টিকিয়ে রাখতে নেতানিয়াহু তাদের সে দাবি মেনে আবার যুদ্ধে ফিরে যান।
একটা জিনিস স্পষ্ট। অভ্যন্তরীণ আপত্তি অগ্রাহ্য করে নেতানিয়াহু যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরণে সক্ষম হলেন, তার জন্য বাহবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাপ্য। পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, ২০ জানুয়ারি তাঁর শপথ গ্রহণের আগেই গাজা থেকে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে হবে, অন্যথা মধ্যপ্রাচ্যে আগুন জ্বলবে।
যে প্রস্তাবের ভিত্তিতে এখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলো, অবিকল সেই চুক্তি গত বছরের মে মাসে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঢাকঢোল পিটিয়ে উপস্থিত করেছিলেন। একই প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তিনি পাস করিয়েও নিয়েছিলেন। নেতানিয়াহু তাতে কান দেননি। এবার সেই একই প্রস্তাব তিনি মেনে নিয়েছেন দুই কারণে। প্রথমত, তাঁর কৌশলগত লক্ষ্য বহুলাংশে অর্জিত হয়েছে, হামাস ও হিজবুল্লাহ সামরিকভাবে পরাস্ত হয়েছে। অন্য কারণ, ট্রাম্পের দাবি মেনে নিয়েছেন, এমন একটি ভাব করে তিনি শুধু যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব আরও পোক্ত করলেন, তা-ই নয়, এ অঞ্চলে তাঁর অনর্জিত কৌশলগত স্বার্থ আদায়ের পথ প্রশস্ত করে রাখলেন। গাজার পর তাঁর লক্ষ্য ইরানের সামরিক স্থাপনা ও সিরিয়ায় ইসরায়েলি সামরিক উপস্থিতি।