অননুমোদিত ইটভাটা বন্ধ করা গেলে, ফিটনেসবিহীন যানের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবং অপরিকল্পিত উপায়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করা গেলে ঢাকার বাতাসের বিষের প্রধান উৎসমুখ বন্ধ করা সম্ভব হবে। এর বাইরে ঢাকার ভেতরে উন্মুক্ত স্থানে আবর্জনা ফেলা এবং নানা জায়গায় পলিথিন ও শুকনো পাতা পোড়ানো বন্ধ করাও অতি জরুরি। রাজপথে সিটি করপোরেশনের নিয়মিত পানি ছিটানোও এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট ফলদায়ী।
এখন মোটাদাগে শীতকাল। সামগ্রিক আবহ বৃষ্টিহীন। প্রাকৃতিক শুষ্কতা বাতাসে ধূলিকণার উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। রাজধানীর ছিন্নমূল মানুষ বিভিন্ন পার্কে বা রাস্তার পাশে কাগজ পুড়িয়ে গা গরম করবেন। সেই ধোঁয়া মিশে বাতাসকে আরও ভারী করে তুলবে।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সবাই সমস্যাটির কারণ জানেন, সমাধানের পথও জানেন। তবু সমাধান হয় না।
তাই সহজে বোধগম্য, সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অভাব তথ্য বা জ্ঞানের নয়; অভাবটি চেতনার। তার স্পষ্ট প্রমাণ—বিপুল প্রচার অভিযানে কথাসরিৎসাগর রচিত হচ্ছে, পরিবেশসংক্রান্ত সেমিনারে আলোচকদের চিৎকারে ঊর্ধ্বলোক অবধি প্রকম্পিত হচ্ছে, কিন্তু বায়ুদূষণ কমছে না।
প্রবল দূষণাসুরের সামনে ঢাকার বায়ু আক্ষরিক অর্থেই অনাথ হয়ে আছে। কুখ্যাত দূষণ প্রাবল্যে একটি বিপুল জনগোষ্ঠী অতি নীরবে বিবিধ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে, অথচ আরোগ্যের অনিবার্য উপায় অবলম্বনের লেশমাত্র দৃশ্যমান নয়। কর্তৃপক্ষ যথাবিহিত আপন স্বভাবে সুস্থিত থেকে গজেন্দ্রগমনে পরিতৃপ্ত।
তবে বায়ুদূষণের সংকট যে মাত্রায় সংক্রমিত হয়েছে, তাতে এখনই তার রাশ টানা না গেলে বিপর্যয় অনিবার্য।