গত ১৩ বছরে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় জনসংখ্যা পরিষদের একটি সভাও নাকি অনুষ্ঠিত হয়নি। অন্যদিকে দেশে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন রয়েছে কিন্তু তা বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। ফলে এখনো বাংলাদেশে প্রতি দুজন নারীর একজনের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ১৮ বছরে পৌঁছানোর আগেই। আর প্রতি ৩ জন কিশোরীর ১ জন মা হয়ে যান ১৯ বছরের মধ্যেই। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভের সর্বশেষ জরিপ তো সেটিই বলছে। বাংলাদেশ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল গৃহীত রেজল্যুশনে শিশু বা বাল্যবিবাহকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে স্বীকৃতি দেয়নি বা ভোট দেয়নি।
বর্তমান সংবিধান হলো ‘গণপ্রজাতন্ত্রী’ বাংলাদেশের সংবিধান। স্বাধীন দেশের জনগণ হলো নাগরিক—‘প্রজা’ নন। ফলে নাগরিকের অধিকারকে বিবেচনায় নিয়ে সংবিধানের শিরোনাম থেকে ‘প্রজাতন্ত্র’ কথাটি বাদ দেওয়া উচিত।
জনসংখ্যার পরিবর্তিত আকার ও কাঠামো বিবেচনায় নিয়মিত বিরতিতে সংবিধান আধুনিকীকরণ বা যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে পর্যালোচনা করার জন্য কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। প্রয়োজন দেশ ও জনগণের স্বার্থে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাদ বা আমূল সংস্কার করা। স্বৈরাচারী বা স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থা নির্মূলে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা এবং একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমাদের সবারই দায়বদ্ধতা রয়েছে। সর্বোপরি, দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে জনমিতিক ভাবনাকে বিবেচনায় রেখে সংবিধানের কোথায় সংস্কার প্রয়োজন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
● ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান